, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ , ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


শ্বশুর হাসানকে টুকরো টুকরো করে ভাত খেতে ডাকা হয়: বর্ণনা দিলেন পুত্রবধূ

  • আপলোড সময় : ০৩-১০-২০২৩ ১২:৩৯:০১ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৩-১০-২০২৩ ১২:৩৯:০১ অপরাহ্ন
শ্বশুর হাসানকে টুকরো টুকরো করে ভাত খেতে ডাকা হয়: বর্ণনা দিলেন পুত্রবধূ
এবার চট্টগ্রামে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার মো. হাসানের কাটা মাথার সন্ধান এখনো মেলেনি। সেই হাসানের মাথা তল্লাশি কার্যক্রমে বেরিয়ে আসছে লোমহর্ষক তথ্য। হত্যা কাণ্ডে জড়িতদের বর্ণনায় গা শিউরে উঠার মতো। নিহত মো. হাসান (৬১) বাঁশখালীর কাথারিয়া ইউনিয়নের বরইতলি এলাকার সাহাব মিয়ার ছেলে।

এদিকে নগরের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে টানা দুই দিন তল্লাশি চালিয়েও বাঁশখালীর সেই হাসানের কাটা মাথার সন্ধান পায়নি পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রো শাখার টিম। গতকাল সোমবার ২ অক্টোবর দ্বিতীয় দিনের মতো নিহতের পুত্রবধূ আনার কলিকে নিয়ে ওই অভিযান চালানো হয়। তবে আনার কলির দেখানো স্থানে পাওয়া যায়নি মাথা।

এর আগে গত ১৯ সেপ্টেম্বর নগরের আকমল আলী রোডে ছোট ছেলে সফিকুর রহমান জাহাঙ্গীরের বাসায় ৬২ বছর বয়সী হাসান আলীকে খুন করে তার মরদেহ টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়। পরে তার মরদেহের কিছু অংশ পুত্রবধূ আনারকলির ব্যবহৃত ট্রলিব্যাগে করে ফেলে দেয়া হয় পতেঙ্গায় ১২ নম্বর ঘাটের খালপাড়ে। কিছু অংশ ফেলা হয় আকমল আলী রোডের খালে। এছাড়া আরেকটি একটি থলেতে করে হাসানের কাটা মাথা ফেলে দেয়া হয় পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে।

গত ২১ সেপ্টেম্বর পতেঙ্গার ১২ নম্বর ঘাটের কাছে সড়কের পাশে একটি লাগেজের ভেতর থেকে ওই খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। লাগেজের ভেতর মরদেহের হাত-পা ও আঙুলের আটটি টুকরা ছিল। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ওই দিনই পতেঙ্গা থানায় মামলা করে।

এদিকে পিবিআইকে মাথা দেখাতে নিয়ে যাওয়া আনার কলি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি দোষী, আমি কি আপনাদের একবারও বলেছি আমি নির্দোষ। তখন আমার আবেগ কাজ করেছে, বিবেক কাজ করেনি। তখন যদি আমার বিবেক কাজ করতো, তাহলে এত বড় পাপে নিজেকে জড়িয়ে পড়তাম না। কারও কথা না ভাবলেও একবার আমার সন্তানের কথা ভাবতাম। আমি আমার সন্তানের কথা পর্যন্ত ভাবিনি।’

এ সময় আনার কলি বলেন, ‘হত্যার পর আমার শ্বশুরকে বস্তার ভেতর ঢুকিয়ে রাখা হয়। এরপর রাতেই টুকরো টুকরো করা হয়। তখন আমি বাসায় ছিলাম না। তারা লাশের টুকরো করে ব্যাগে ঢুকিয়ে আমাকে ভাত খাওয়ার জন্য ডেকেছিল। পরে আমিসহ স্বামী শফিকুর রহমানের সঙ্গে পতেঙ্গা সি-বিচে গিয়ে লাশের একটি অংশ ফেলে দেয়।’
 
এদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পিবিআই পরিদর্শক মো. ইলিয়াস খান বলেন, ‘গত ২১ সেপ্টেম্বর ভোর ৭টার দিকে আনার কলি এবং তার স্বামী শফিকুর রহমান ওরফে জাহাঙ্গীর এসে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকায় মাথার খণ্ডিত অংশ ফেলে দিয়ে যায়। ঘটনার পর থেকে নিহতের ছোট ছেলে শফিকুর রহমান ও তার স্ত্রী আনার কলি পলাতক ছিল। শুক্রবার আনার কলিকে কক্সবাজার মহেশখালী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার তাকে আদালতে সোপর্দ করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) তার রিমান্ড শেষ হবে।’
 
তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় দিনের মতো সোমবার সকাল থেকে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকায় আনার কলিকে নিয়ে কাটা মাথা উদ্ধারে অভিযান চালানো হয়। পিবিআইয়ের ১৫ জনের একটি টিম তল্লাশি অভিযানে অংশ নেয়। প্রথম দিনে তার দেখানো মতে হত্যায় ব্যবহৃত দা উদ্ধার করা হয়। তবে মাথা এখনও উদ্ধার করা যায়নি। অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

এদিকে হাসান দীর্ঘ ২৭ বছর স্ত্রী ও ছেলেদের থেকে আলাদা ছিলেন। সম্প্রতি তিনি স্ত্রী-সন্তানের কাছে ফিরে আসেন। কিন্তু এর মধ্যেই হাসানকে মৃত উল্লেখ করে তার ছেলে মোস্তাফিজুর জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেছিল। এ ছাড়া আরও বেশকিছু জায়গায় হাসানকে মৃত বলেই দেখিয়েছিল পরিবার। ফলে হাসান ফিরে আসায় সম্পত্তি নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এর জেরে গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে হাসানকে খুন করা হয়।
দেশে ফিরে নিজের স্বপ্নের কথা জানালেন বিশ্বজয়ী হাফেজ আনাস

দেশে ফিরে নিজের স্বপ্নের কথা জানালেন বিশ্বজয়ী হাফেজ আনাস